ঠাকুরগাঁওয়ে সরকার নির্দেশ অমান্য করে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা
- আপডেট সময় : ০১:৩৬:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪
- / 50
গত দুই সপ্তাহ ধরে ঠাকুরগাঁওয়ের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদ্যু শৈত্য প্রবাহ। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এমন পরিস্থিতিতেও ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।সরকার নির্দেশ অমান্য করে করে ঠাকুরগাঁও জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা।
মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকলেও জেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রয়েছে।
কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়,তীব্র ঠান্ডায়ও শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে দাঁড় করিয়ে করানো পিটি। তবে স্কুলে শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল কম।
তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও তা না করায় অনেক অভিভাকই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় লিমা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন,আমার ছেলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলে যাওয়া আসা সময় প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাসে তার সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের সুস্থ্য রাখতে কিছুদিন স্কুল বন্ধ রাখা প্রয়োজন বলেও দাবি করেন এ অভিভাক।
সদর উপজেলা মিলনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হামিদ বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে তাপমাত্রা দশের নিচে নেমেছে। কুয়াশার সঙ্গে অতিরিক্ত ঠান্ডা বাতাস শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে।
এমন হাড় কাপানো শীত, বড়রাই সহ্য করতে পারি না। শিশুরা কীভাবে সহ্য করবে?।
সদর উপজেলার ধন্দোগাঁও আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুমা আখতার বলেন,শীতের কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
গিলাবাড়ী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান -ই-হাবিব বলেন,বিদ্যালয় খোলা থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছেন না। তীব্র শীতের কারণে অনেক অভিভাবকই স্কুল বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করছেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না পেলে স্কুল তো বন্ধ রাখা যায় না।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তি মো. শাহীন আকতার বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনুযায়ী সকাল১০টার পর তাপমাত্রা দেখে বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলাতে আবহাওয়া অফিস না থাকায় মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে সকাল ১০টার পর তাপমাত্রা ১১থেকে ১২ডিগ্রী হয়ে গেছে তাই বন্ধের বিষয়টি ভাবা হয়নি।তবে, আজকে বন্ধের বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেলা শিক্ষাঅফিস সুত্রে জানা যায়,জেলার ৫টি উপজেলায় ৩৯৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,১২৫টি মাদ্রাসা,৫৭টি কারিগরিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ২লাখ ১০হাজার ৫৭৮জন। অন্যদিকে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৯৯৮টি। এ সব বিদ্যালয়ে প্রায় ৩লাখ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত।
এ দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ৪৫টি শয্যা বিপরীতে ১৮০জন শিশু ভর্তি রয়েছে। গত কয়েক দিনে সর্দি-জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শয্যাসংকটের কারণে কোনো কোনো বেডে দুটি শিশুকে রাখা হয়েছে। বেডে জায়গা না পেয়ে অনেক রোগী ওয়ার্ড ও করিডরের মেঝেতে জায়গা দিতে হয়েছে।
হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সাজ্জাদ হায়দার শাহীন বলেন, শীতের এ সময়ে ভাইরাসের প্রবণতা বেড়ে যায়। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে শিশু ও বয়স্কদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।