কান্নাই ভেঙে পড়লেন ৭০ বছর বয়সে ভ্যান চালান মতিউর রহমান চোরে নিয়ে গেছে আমার ভ্যান
- আপডেট সময় : ১২:০৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
- / 40
সংসারের ঘানি টানতে টানতে ক্লান্ত মতিউর রহমান । কিন্তু কিছুই করার নাই। সংসারে ৮ জনের মুখের খাবার আমাকে প্রতিদিন যোগাড় করতেই হয়। ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি।” এভাবেই নিজের ভাগ্যের পরিহাসের কথা বলছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের জগথা গ্রামের, স্টেশনপাড়া মতিউর রহমান।
আনুমানিক মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে পীরগঞ্জ রেলস্টেশনের পূর্ব পাশ থেকে মতিউর রহমানের ভ্যান চুরি করে নিয়ে যায় চোর।
অত্যন্ত দুঃখের জনক বিষয়,বৃদ্ধার বয়স এখন ৭০ বছর এই বয়সে এলাকায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। কান্না জাড়িত কন্ঠে জানান, সংসারে বৃদ্ধা স্ত্রী, প্রতিবন্ধী দুই পা নেই, ৪ মেয়ে ও দুই ছেলে ৮ সদস্যের পরিবার নিয়ে তিনি খুব কষ্ট করে দিন কাটান। সংসারে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিও তিনি নিজে। বয়সের কারণে সোজা হয়ে হাঁটতে পারে না। দিনে ৩০০/৪০০ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে কোনরকম সংসার চলে। কোন কোন দিন না খেয়েও থাকতে হয়। এই বয়সে সংসারে বিশ্রামে থাকার কথা, নাতি-নাতনি নিয়ে আনন্দে থাকার কথা তার ভাগ্যটা অন্যরকম।যুগের পরিবর্তন হলেও,আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে বদলায়নি মতিউর রহমান কপাল। সকাল বিকাল ভ্যান চালিয়ে ঝড়ে কত ঘাম।সভ্যতাকে টেনে বেড়ায়,পায়না কোনো দাম।লাঞ্চনা-বঞ্চনা সহে,ছুটে চলে যাত্রী নিয়ে…শোন এক ভ্যান চালকের জীবন কাহিনী” নাম তার মতিউর রহমান ।হাটিহাটি পা-পা করে ৭০ এর ঘরে পা দিয়েছে বয়স।যে বয়সে একজন মানুষ আরাম আয়েশ করবে।নাতি নাতনির সাথে হাসি তামাশা আর আড্ডাই মেতে থাকার কথা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বয়সের ভারত্ব নিয়ে দারিদ্রতার কাছে হার মেনে প্রতিদিন ভ্যানের মাইলের পর মাইল ভ্যান চালিয়ে নিজের ও পরিবারের অন্ন যোগাতে হয়।এই বৃদ্ধ বয়সে ভ্যান চলতে চাইলেও চালাতে পারে না মতিউর রহমান ।তবুও নিত্য দিনের প্রয়োজন মেটাতে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বেড়োতে হয় দুটি টাকার জন্য। একসময় কচ্ছপ গতির যানবাহন গুলোকে করা যুগের প্রয়োজন অনুসারে আধুনিক করা হয়েছে।সংযোগ করা হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি। ভ্যান গাড়ি গুলোতেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।কিন্তু হয়নি মতিউর রহমানের মতো অনেক মতিউর রহমানের ভাগ্যের বদল।
তিনি বলেন প্রতিদিন ভ্যান চালাতে পারিনা,বৃদ্ধ বয়সে কখনও অসুস্থ থাকি কখনও আবহওয়া খারাপ থাকে আবার কোনো দিন ভাড়ায় হয়না। আধুনিক যুগে সব ক্ষেত্রেই তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তির ছোয়া লেগেছে।আর তার প্রভাব পড়েছে রিক্সা বা ভ্যান গাড়িতেও। বর্তমানে এলাকার সব ভ্যান গাড়িতেই মটর লাগানো।ফলে ভ্যান চালকের তেমন কষ্ট হয়না,কম সময়ে বেশি ভাড়া মারা যায়।এখন মানুষ সময়ের দাম দিতে শিখেছে তাই সবাই অটো ভ্যানে যাতাযাত করে।কিন্তু দারিদ্রতার অভিশাপের অভিশাপ্ত হয়ে অর্থের অভাবে এখনও ভেন কি আর কিনতে পারবো।পহেলা রমজানে আমার ঘেন্টা চুরি হয়ে গেছে আমি এখন কি করবো, কেমনে সংসার চালাবো খুব কষ্ট পেয়েছি বাজান কে আমাকে এখন ভেন কিনে দিবে আমি কেমনে এখন ভ্যান কিনব কেমনে সংসার চালাবো কেমনে, কান্না জড়িত কন্ঠে বলছেন ভ্যান চালক মতিউর রহমান।