ঈদের আগে গরিবের ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনপ্রতি দশ কেজির পরিবর্তে ৮ থেকে ৯ কেজি করে চাল দেয়া হয়ছে। এতে ক্ষুদ্ধ ইউনিয়নের সুবিধাভোগীরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৭নং চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কয়েক জন মেম্বার এর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। দরিদ্র ও অস্বচ্ছলদের ভিজিএফ কার্ড না দিয়ে না দিয়ে স্বচ্ছলদের কার্ডের মাধ্যমে চাল দেয়ার অভিযোগও তোলেন ভুক্তভোগীরা। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সদরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে হত-দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়।

চিলারং ইউনিয়নের বাসিন্দা বৃদ্ধ জয়নুল আবেদীন জানান আমি আমার ৯নং ওয়ার্ড এর মেম্বার আবুল কালাম এর কাছে ভিজিএফের ১০ কেজি নিতে গেলে, আবুল কালাম মেম্বার আমাকে ৮ কেজি ৭০০ গ্রাম চাউল দেয়।

চাল নিতে আসা এক বৃদ্ধার সাথে কথা হয়। নামপ্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, আমার ৭নং ওয়ার্ড এর মেম্বার সোভা আলী আমাকে ৮ কেজি ২০০ গ্রাম চাউল দেয়। এ কথা বলতে গেলে মেম্বার রেগে গিয়ে বলেন ফ্রি চাল পাচ্ছেন এটাই বেশি।

অভিযোগ রয়েছে, ওই ইউনিয়নে অস্বচ্ছলদের ভিজিএফ কার্ড না দিয়ে স্বচ্ছলদের কার্ড দেয়া হয়েছে। স্বচ্ছল ব্যক্তিরা সেই চাল গরিবদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

চাল কিনতে আসা এক বৃদ্ধের সাথে কথা হয়। নামপ্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, মুই গরিব মানুষ। মুই কোন চাউনের কার্ড পাওনি। কাহোও মোক কিছু দেনা। আজি শুনিনু বোডড (পরিষদ) নাকি চাউল দিবে। আসেহেনে শুনুনু লোকলা চাউল পাহেনে বিকাছে (বিক্রি)। মুইহো মাইছের কাছত ৩০০ টাকা ধার করে দশ কেজি কিনিনু এলা দেখেছু আট কেজি। মোক গরিব লোকটাক ঠকাবা নাগিবে। কি লাভ মোক ঠকাহেনে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা প্রকৃত গরিব তারা যদি চাল না পায় তাহলে ভিজিএফের চাল কারা পাচ্ছে? যারা চাল পাচ্ছে তারা অনেকেই তা বিক্রি করে দিচ্ছে। বস্তা প্রতি আধাকেজি চাল কম মানা যায় কিন্তু তিন থেকে দুই কেজি! বাকি চাল কোথায় যাচ্ছে? কে খাচ্ছে?।

তারা আরো বলেন, এতো অভিযোগ তবুও কোন ব্যবস্থা নেয়া না চেয়ারম্যন। চেয়ারম্যনকে অভিযোগ দিলে তিনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও বাস্তবে তিনি কোন ব্যবস্থা নেই।যারা সত্যিকারেই অসহায় দু’একজন ছাড়া বাকিরা কেউ কোন সুবিধা পায় না বলে অভিযোগ তাদের।

তবে চাল কম দেয়ার ব্যাপারে চেয়ারম্যান ফজলুল হকের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমার মেম্বাররা কেউ চাউল বিতরণ করবে না, আপনারা সাংবাদিকরা চাউল বিতরণ করুন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা বেলায়েত হোসেন’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।