ঠাকুরগাঁওয়ে ধুমধাম করে বট ও পাকুর গাছের বিয়ে
- আপডেট সময় : ১২:৫৪:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪
- / 34
মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, স্টাফ রিপোর্টার:
ঠাকুরগাঁওয়ে ধুমধাম আয়োজনের মধ্য দিয়ে হয়ে গেল বট ও পাকুর গাছের বিয়ে। হিন্দু রীতি মেনেই হয়েছে সব আনুষ্ঠানিকতা। অতিথিদের দাওয়াত গান নাচসহ ছিল নানা আয়োজন। প্রকৃতির মঙ্গল কামনায় এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাক ঢোল আর সানাই মুখরিত ঠাকুরগাঁওয়ের ঝুকুরঝাড়ী অগ্নিশিখা শ্মশান ঘাট। সাজানো হচ্ছে বর আর বধুকে। বর একটি বটগাছ আর কনে পাকুর। নামও রাখা হয়েছে তাদের ববের নাম গৈারব চন্দ্র সিংহ ও কনের নাম স্বর্ণলতা। ব্যতিক্রমী এই বিয়েকে ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ।
মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের ধুকুরঝাড়ী গ্রামে এমন বিয়ের আয়োজন করা হয়। গায়ে হলুদসহ হিন্দু রীতিনীতি মেনেই সব আয়োজন। ধুতি পাঞ্চাবি ও টোপর পড়ানো হয় বরকে। আর কনেকে সাজানো হয় শাড়ি টোপরে। এমন বিয়ে দেখতে ছুটে আসেন আশপাশের কয়েকগ্রামের মানুষ। বাদ যায়নি ছোটরাও ঘাড়ে উঠে বট ও পাকুরে বিয়ে দেখছেন তারা। বিয়েতে আমন্ত্রন জানানো অতিথিতের খাওয়া দাওয়াসহ নানা আয়োজন ছিল বিয়ে অনুষ্ঠানে।
দুই গাছের বিয়েতে ঘটকালি করেছেন ধুকুরঝাড়ী গ্রামের কৃষক অলিন চন্দ্র। তিনি বলেন, প্রথমে বরের বাবার প্রস্তাব কনের বাবাকে দিই। এরপরে দুজনে রাজি হওয়ার পর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। জীবনে অন্য কোনো বিয়ের ঘটকালি করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও এই বিয়ের অভিজ্ঞতায় বেশ আনন্দিত।
বর বটগাছের বাবা জীতেন চন্দ্র বলেন, দুটো গাছই তিনি লাগিয়েছেন। বটগাছ লাগিয়েছেন ছায়ার জন্য আর পাকুড় প্রয়োজনের জন্য। দুই গাছের বিয়ে দিতে হবে স্বপ্ন দেখেন তিনি। স্বপ্নের কথা গ্রামের লোকজনকে জানালে সবাই রাজি হয়ে যায়। দ্রুত দিনক্ষণ ঠিক করে আজ ছেলের বিয়ে দিলাম। বিয়ে উপলক্ষে গ্রামের অনেকেই উপোস রয়েছে।
পাকুড় গাছ স্বর্ণলতা রানির বাবা কার্তিক চন্দ্র সিংহ বলেন, আমি মেয়ের বাবা হিসেবে কন্যাদান করেছি। এই বিয়ে এবং গাছ দুটি আমাদের মঙ্গল বয়ে আনবে, সমাজের অশান্তি দুর করবে।
পুরোহিত জগদীশ চক্রবর্তী ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সমর কুমার চ্যাটার্জি জানান বট ও পাকুর গাছের বিয়ে প্রকৃতি ও মঙ্গল কামনা হয় বলে তাদের বিশ্বাস।