ঢাকা ০৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের গায়েবী জানাজা Logo স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-পলিটেকনিকে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা Logo বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত Logo ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ Logo রাণীশংকৈল ভাংবাড়িতে নিম্নমানের ইটে চলছে সড়ক নির্মাণ Logo ঠাকুরগাঁওয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বর্জন Logo বালিয়াডাঙ্গীতে প্রকল্পে সঞ্চয়ের টাকা পেলেন ৮০ জন নারী শ্রমিক Logo দখল আর দুষণে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের খালগুলো বিলীন, সচেতন নাগরিক সংগঠন এর মানববন্ধন Logo রাণীশংকৈলে মাদরাসা সভাপতির বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ Logo নদীতে গোসল করতে নেমে শিক্ষার্থী নিখোঁজ, দুইদিন পর মরদেহ উদ্ধার
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
জনপ্রিয় দৈনিক আজকের ঠাকুরগাঁও পত্রিকায় আপনাকে স্বাগতম... উত্তরবঙ্গের গণমানুষের ঠিকান এই স্লোগানকে সামনে রেখে দেশ জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক আজকের ঠাকুরগাঁও এর জন্য, দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজে একযোগে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আপনি যদি সৎ ও কর্মঠ হোন আর অনলাইন গনমাধ্যমে কাজ করতে ইচ্ছুক তবে আবেদন করতে পারেন। আবেদন পাঠাবেন নিচের এই ঠিকানায় ajkerthakurgaon@gmail.com আমাদের ফেসবুল পেইজঃ https://www.facebook.com/ajkerthakurgaoncom প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন মোবাইল : ০১৮৬০০০৩৬৬৬

জামাই মেলায় উৎসবের আমেজ

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / 114
আজকের ঠাকুরগাঁও অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার তেঘরিয়া মাঠে পাঁচ দিনব্যাপী জামাই মেলা শুরু হয়েছে। গত দুই বছর ধরে স্থানীয়দের উদ্যােগে এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই হাজারো মানুষের ভিড় জমেছে। এ মেলা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

জানা গেছে, মাদারগঞ্জের জামাই মেলায় এ বছর ৩ শতাধিক বিভিন্ন ধরণের দোকানী তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় বিক্রি হচ্ছে হরেক প্রজাতির মাছ। মেলার এক পাশে সারি সারি মাছের দোকান সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ক্রেতা বাজার ঘুরে ইচ্ছেমতো চাহিদা অনুযায়ী মাছ কিনে শ্বশুর বাড়িতে যাচ্ছেন। এতে বাড়ির সবাই খুশিতে ব্যাকুল জামাইয়ের নানা পণ্যের কেনাকাটায়।

জামাই মেলার মাছ বাজারে বোয়াল, কাতল, বাঘাইড়, আইড়, চিতলসহ বিভিন্ন জাতের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। সেসব মাছের ওজন ৫ থেকে ২০ কেজি বা তারও বেশি। এখানে শুধু দেশীয় জাতীয় মাছই বাজারে উঠেনি। বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছও রয়েছে থরে থরে সাজানো।

শুধু মাছের কথা বললেই হবে না। মেলাতে ঝুড়ি, খুরমা, তিলের খাজা, বাদামের খাজা, চিড়ার নাড়ু, জিলাপি, গুলগুলি, নই, বুটকলাইসহ বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার পাওয়া যাচ্ছে।

জামাই মেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে কারিগররা মিষ্টির দোকান সাজিয়েছে। সাদা, কালোজাম, বাদামী, হাসিখুশি, বালিশসহ হরেক রকমের বাহারি নামেন সবমিষ্টি। মেলাতে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের বালিশ মিষ্টি উঠেছে। বেচাকেনা খুবই ভালো হয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন একাধিক ব্যবসায়ী।

মেলাতে ঘুরতে আসা মাহিয়া মাহি বিভিন্ন ধরনের পাঁচ কেজি মিষ্টি কিনেছেন। তিনি বলেন, মিষ্টি সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু মেলার বাহারি ধরনের মিষ্টি দেখে যে কেনো খাতক প্রেমে পড়ে যায়। তাই আজ একটু বেশি করেই নিয়ে যাচ্ছি।

জামাই মেলার নানা ধরনের খাদ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চমকপদ ফার্নিচারের সমাহার ঘটেছে। চেয়ার, টেবিল, আলনা, সুকেজ, ড্রেসিং টেবিল, ওয়ায়ড্রপ, খাট।

মেলায় আগতরা জানান, সেখানে সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটে সেখানে সেখানে নিত্যপ্রয়োজন জিনিসপত্র কেনাবেচা হবে এটাই স্বাভাবিক। মূল মেলা পাঁচদিন চললেও ফার্নিচারের বেচাকেনা হয় প্রায় পক্ষব্যাপী।

অপরদিকে মেলায় যেমন নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্রের পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে। নাগরদোলা, নৌকা, চরকি, রেলগাড়ি ও গ্যাস বেলুনের সমাহার ছড়াচ্ছে চারদিক। শিশুরা তাদের ইচ্ছে মতো নানা রঙ-বেঙের বেলুন উড়িয়ে হাতে মুখরোচক খাবার হাত ভর্তি করে চলছে বাড়ির প্রাণে। মুখে তৃপ্তির হাসি। দেখলেই মনে হয় তারা আত্মতৃপ্তি নিযে ঘরে ফিরছে।

মেলায় আগত একাধিক ব্যক্তি বলেন, জামাই মেলার মূল উদ্দ্যেশ্য হলো ‘জামাই’ শ্বশুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা। এই মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোতে মেয়ে আর জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়। জামাতারা মেলা থেকে বড় বড় মাছ কেনেন শ্বশুরবাড়ির জন্য। আবার জামাইকে মেলায় কেনাকাটার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি টাকা দেন। সেই টাকা দিয়েই মেলা থেকে কেনাকাটা করে জামাই শ্বশুর বাড়িতে যান। গত দুই বছর ধরে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ ‘জামাই মেলা’ শুরু হয়েছে।

মেলার আয়োজক কমিটি ও স্থানীয়রা বলেন, গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্ক আরো গভীর করার। এই মেলা উপলক্ষ্যে কয়েক এলাকার লোকজন তাদের আত্মীয়-স্বজন ও মেয়ে, জামাইকে দাওয়াত করে ডেকে আনা হয়। জামাই মেলা থেকে জামাইরা কেনাকাটা করে শ্বশুরবাড়ি যান। মেলায় আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার জামাই ঘুরতে আসে।

মেলায় ঘুরতে আসা স্বপন মাহমুদ বলেন, এই মেলায় মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়েছে এবং পুরনো আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে দাওয়াত করে এনেছি। এই মেলার মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্ক আরো বেশি সুন্দর ও গভীর হবে। জামাইকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি, মেলা থেকে কেনাকাটা করার জন্য।

আবদুল বারিক নামে একজন বলেন, আমার শ্বশুর আমাকে দাওয়াত করে এনেছেন। গতকাল এসেছি শ্বশুরবাড়িতে, আজ মেলায় আসার আগে শ্বশুর হাজার টাকা দিয়েছেন। শাশুড়ি আর কিছু টাকা দিয়েছেন লুকিয়ে। মেলা থেকে বড় একটি মাছ কিনেছি। শশুর শাশুড়ির জন্য পান সুপারি নিয়েছি। আমার একটি ছোট শালিকা রয়েছে তার জন্য এখন কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাব।

চরপাকেরদহ পলাশপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এখন নিজেদের সংসারের চাপে তাদের আর আগের মতো বাপের বাড়িতে আসা হয় না। মেলার দাওয়াত দিয়েছিলাম। আমার দুই মেয়ে, জামাই ও নাতি, নাতনিসহ আসছে। জামাইদের মেলার সেলামী দিয়েছি। বাড়িতে উৎসব উৎসব লাগছে’।

শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম বলেন, গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন করা হয়। গত বছরের মেলা জাঁকজমক, সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন শেষ হয়েছে। এ বছরে প্রথম দিনই মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। মেলায় শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুবই দায়িত্বশীল।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ঝাড়কাটা নদীর তীরে চরপাকেরদহ পলাশপুর গ্রাম। চরপাকেরদহ ইউপির এই গ্রামে পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে বসে ঐতিহ্যবাহী পলাশপুর জামাই মেলা। মেলায় বিক্রি হয় মাছ, মিষ্টি, পান-সুপারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।

মেলা ঘিরে গ্রামটিতে প্রায় সপ্তাহজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। পাঁচ দিনব্যাপী মেলার প্রথম দিনেই মানুষের উপচে পড়া ভিড় জমে। গত শনিবার বিকেলে এ মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলাল।

তিনি জানান, মেলায় যারা বিভিন্ন ধরনের দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাদের যেন ব্যবসা ভালো হয়। যাতে আগামীতে আরো উৎসাহ নিয়ে নতুন এ মেলায় ব্যবসা করতে আসেন। পাশাপাশি স্থানীয়রাও যেন লাভবান হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জামাই মেলায় উৎসবের আমেজ

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার তেঘরিয়া মাঠে পাঁচ দিনব্যাপী জামাই মেলা শুরু হয়েছে। গত দুই বছর ধরে স্থানীয়দের উদ্যােগে এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই হাজারো মানুষের ভিড় জমেছে। এ মেলা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

জানা গেছে, মাদারগঞ্জের জামাই মেলায় এ বছর ৩ শতাধিক বিভিন্ন ধরণের দোকানী তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় বিক্রি হচ্ছে হরেক প্রজাতির মাছ। মেলার এক পাশে সারি সারি মাছের দোকান সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ক্রেতা বাজার ঘুরে ইচ্ছেমতো চাহিদা অনুযায়ী মাছ কিনে শ্বশুর বাড়িতে যাচ্ছেন। এতে বাড়ির সবাই খুশিতে ব্যাকুল জামাইয়ের নানা পণ্যের কেনাকাটায়।

জামাই মেলার মাছ বাজারে বোয়াল, কাতল, বাঘাইড়, আইড়, চিতলসহ বিভিন্ন জাতের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। সেসব মাছের ওজন ৫ থেকে ২০ কেজি বা তারও বেশি। এখানে শুধু দেশীয় জাতীয় মাছই বাজারে উঠেনি। বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছও রয়েছে থরে থরে সাজানো।

শুধু মাছের কথা বললেই হবে না। মেলাতে ঝুড়ি, খুরমা, তিলের খাজা, বাদামের খাজা, চিড়ার নাড়ু, জিলাপি, গুলগুলি, নই, বুটকলাইসহ বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার পাওয়া যাচ্ছে।

জামাই মেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে কারিগররা মিষ্টির দোকান সাজিয়েছে। সাদা, কালোজাম, বাদামী, হাসিখুশি, বালিশসহ হরেক রকমের বাহারি নামেন সবমিষ্টি। মেলাতে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের বালিশ মিষ্টি উঠেছে। বেচাকেনা খুবই ভালো হয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন একাধিক ব্যবসায়ী।

মেলাতে ঘুরতে আসা মাহিয়া মাহি বিভিন্ন ধরনের পাঁচ কেজি মিষ্টি কিনেছেন। তিনি বলেন, মিষ্টি সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু মেলার বাহারি ধরনের মিষ্টি দেখে যে কেনো খাতক প্রেমে পড়ে যায়। তাই আজ একটু বেশি করেই নিয়ে যাচ্ছি।

জামাই মেলার নানা ধরনের খাদ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চমকপদ ফার্নিচারের সমাহার ঘটেছে। চেয়ার, টেবিল, আলনা, সুকেজ, ড্রেসিং টেবিল, ওয়ায়ড্রপ, খাট।

মেলায় আগতরা জানান, সেখানে সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটে সেখানে সেখানে নিত্যপ্রয়োজন জিনিসপত্র কেনাবেচা হবে এটাই স্বাভাবিক। মূল মেলা পাঁচদিন চললেও ফার্নিচারের বেচাকেনা হয় প্রায় পক্ষব্যাপী।

অপরদিকে মেলায় যেমন নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্রের পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে। নাগরদোলা, নৌকা, চরকি, রেলগাড়ি ও গ্যাস বেলুনের সমাহার ছড়াচ্ছে চারদিক। শিশুরা তাদের ইচ্ছে মতো নানা রঙ-বেঙের বেলুন উড়িয়ে হাতে মুখরোচক খাবার হাত ভর্তি করে চলছে বাড়ির প্রাণে। মুখে তৃপ্তির হাসি। দেখলেই মনে হয় তারা আত্মতৃপ্তি নিযে ঘরে ফিরছে।

মেলায় আগত একাধিক ব্যক্তি বলেন, জামাই মেলার মূল উদ্দ্যেশ্য হলো ‘জামাই’ শ্বশুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা। এই মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোতে মেয়ে আর জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়। জামাতারা মেলা থেকে বড় বড় মাছ কেনেন শ্বশুরবাড়ির জন্য। আবার জামাইকে মেলায় কেনাকাটার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি টাকা দেন। সেই টাকা দিয়েই মেলা থেকে কেনাকাটা করে জামাই শ্বশুর বাড়িতে যান। গত দুই বছর ধরে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ ‘জামাই মেলা’ শুরু হয়েছে।

মেলার আয়োজক কমিটি ও স্থানীয়রা বলেন, গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্ক আরো গভীর করার। এই মেলা উপলক্ষ্যে কয়েক এলাকার লোকজন তাদের আত্মীয়-স্বজন ও মেয়ে, জামাইকে দাওয়াত করে ডেকে আনা হয়। জামাই মেলা থেকে জামাইরা কেনাকাটা করে শ্বশুরবাড়ি যান। মেলায় আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার জামাই ঘুরতে আসে।

মেলায় ঘুরতে আসা স্বপন মাহমুদ বলেন, এই মেলায় মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়েছে এবং পুরনো আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে দাওয়াত করে এনেছি। এই মেলার মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্ক আরো বেশি সুন্দর ও গভীর হবে। জামাইকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি, মেলা থেকে কেনাকাটা করার জন্য।

আবদুল বারিক নামে একজন বলেন, আমার শ্বশুর আমাকে দাওয়াত করে এনেছেন। গতকাল এসেছি শ্বশুরবাড়িতে, আজ মেলায় আসার আগে শ্বশুর হাজার টাকা দিয়েছেন। শাশুড়ি আর কিছু টাকা দিয়েছেন লুকিয়ে। মেলা থেকে বড় একটি মাছ কিনেছি। শশুর শাশুড়ির জন্য পান সুপারি নিয়েছি। আমার একটি ছোট শালিকা রয়েছে তার জন্য এখন কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাব।

চরপাকেরদহ পলাশপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এখন নিজেদের সংসারের চাপে তাদের আর আগের মতো বাপের বাড়িতে আসা হয় না। মেলার দাওয়াত দিয়েছিলাম। আমার দুই মেয়ে, জামাই ও নাতি, নাতনিসহ আসছে। জামাইদের মেলার সেলামী দিয়েছি। বাড়িতে উৎসব উৎসব লাগছে’।

শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম বলেন, গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন করা হয়। গত বছরের মেলা জাঁকজমক, সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন শেষ হয়েছে। এ বছরে প্রথম দিনই মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। মেলায় শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুবই দায়িত্বশীল।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ঝাড়কাটা নদীর তীরে চরপাকেরদহ পলাশপুর গ্রাম। চরপাকেরদহ ইউপির এই গ্রামে পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে বসে ঐতিহ্যবাহী পলাশপুর জামাই মেলা। মেলায় বিক্রি হয় মাছ, মিষ্টি, পান-সুপারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।

মেলা ঘিরে গ্রামটিতে প্রায় সপ্তাহজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। পাঁচ দিনব্যাপী মেলার প্রথম দিনেই মানুষের উপচে পড়া ভিড় জমে। গত শনিবার বিকেলে এ মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলাল।

তিনি জানান, মেলায় যারা বিভিন্ন ধরনের দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাদের যেন ব্যবসা ভালো হয়। যাতে আগামীতে আরো উৎসাহ নিয়ে নতুন এ মেলায় ব্যবসা করতে আসেন। পাশাপাশি স্থানীয়রাও যেন লাভবান হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।