ঠাকুরগাঁওয়ে এক গ্রামেই ১৫ জোড়া যমজ ভাই-বোন।
- আপডেট সময় : ০২:০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩
- / 63
ঠাকুরগাঁওয়ে এক পরিবারে ৪ জোড়াসহ এক গ্রামেই রয়েছে ১৫ জোড়ার অধিক যমজ সন্তান। তাদের মাঝে কিছু বিষয়ে মিল-অমিল থাকলেও বন্ধন বেশ দৃঢ়। যমজ সন্তান নিয়ে অনেকে কটু মন্তব্য করলেও খুশি তাদের পরিবার। একসাথে অনেক গুলো যমজ সন্তান দেখতে ভীড় জমান বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহর ঘেঁষা সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের দক্ষিণ ঠাকুরগাঁও গ্রাম। সবুজ-শ্যামল গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষি পেশার সাথে জড়িত। আর এ গ্রামের একই পরিবারে রয়েছে চার জোড়া যমজ সন্তান। তাদের আশেপাশে রয়েছে আরও পনেরো জোড়ার অধিক যমজ ভাই-বোন।
সরেজমিনে সেই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় যমজ ভাই-বোনের এক অন্যরকম ভালো লাগার দৃশ্য। মলিন আর মনহরি যমজ দুই ভাই। তারা যমজ হিসেবে সবার চেয়ে বয়সে বড়। পরিবারের কাজ নিয়ে নানা ব্যস্ততায় সময় কাটে তাদের। তবে বয়স বাড়লেও মিল কমেনি তাদের। একসাথে হাট-বাজার যাওয়া আর একই পোশাক পরিধান করা আবার কৃষি কাজও একসাথে করেন তারা। তাদের সাথেই বেড়ে উঠছে আরও তিন জোড়া যমজ সন্তান। সম্পর্কে তারা তাদের ভাই-ভাতিজা। ছোট সেই যমজেরা একসাথে বেড়ে উঠছে শৈশবের সেই দূরন্তপনায়৷ পাপ্পু-প্রাপ্পু, খুশি-বন্ধন আর নিবিড়-নিলয়। সারাদিন পুরো বাড়ি যেন তারা মাতিয়ে রাখেন। একসাথে খেলাধুলা করা,পড়াশোনা করা আর সাজগোজে সময় পার হয়ে যায় তাদের।
এরা একজন যেন আরেকজনের প্রতিচ্ছবি। কখনো কখনো তাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ, চলাফেরা একবারে হুবহু মিলে যায়। আবার এর বিপরীতও দেখা যায়। বাড়ি, স্কুল, গ্রাম সবখানেই একই চেহারার জন্য নানান রকম অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে সময় কাটে সবার। তবে এতে সবার প্রতিক্রিয়া বেশ মজাদার। যমজ হবার দরুণ তারা সবার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও প্রিয় হয়ে ওঠেছে।
এদের মত এ গ্রামে রয়েছে ইতি-বিথী, তৃণা-তৃষাসহ আরো ১৫ জোড়া যমজ ভাই বোন। তারা অনেকে বিভিন্ন জায়গায় পড়াশোনা ও কর্মরত রয়েছেন। যমজ ভাই-বোন ঘিরে গ্রামটির নাম মজার ছলে অনেকে যমজপাড়া বলেও অভিহিত করছেন।
যমজ ভাই-বোনদের দেখতে আসা বিশিষ্ট কলামিস্ট নাজমুল হোসেন বলেন, একসাথে একই পরিবারে চার জোড়া যমজ ভাই-বোন দেখে আলাদা রকম ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করে। একই রকম দেখতে, পোশাকেও তাদের মিল দেখে বেশ ভালো লাগছে।
বয়স বাড়লেও কমেনি মলিন আর মনহরি দুই মিল। বড় ভাই মলিন বলেন, ছোটবেলা থেকে আমরা একসাথে। আমাদের তেমন কোন ধরনের ঝামেলাও হয়নি। তবে অনেক মজার স্মৃতি আছে। একজন দোকানে বাকী করলে আরেক জনকে বলতো। ঝামেলা হলেও এটা খুব ভালো লাগতো।
পাপ্পু ও প্রাপ্পুর মা বিদিশা রাণী বলেন, তাদের মাঝে মিল যেমন বেশী আবার ঝগড়াও বেশি। একসাথে স্কুলে যাতায়াত করে। খেলাধুলা, খাওয়া দাওয়া সবই একসাথে করে। এটি বেশ ভালো লাগে। যমজেরা আমাদের সংসারে আর্শীবাদ।
সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার রায় বলেন, ১৫ জোড়া যমজ একই গ্রামের বিষয়টি ইউনিয়ন ও জেলাজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি করেছে। আমরা তাদের পাশে ছিলাম। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকা হবে।